এক ঝলকে

10/recent/ticker-posts

Advertisement

8844

"ই-বেঁচে থাকা" লিখেছেন শঙ্খ দত্ত।

শঙ্খ দত্ত: আমাদের প্রথাগত শিক্ষা জীবন তখন শেষের পথে। কাগজে একটা শব্দ পড়লাম , 'ই'-বর্জ্য। মানেটা খুঁজতে গিয়ে যেটা বুঝলাম , তা হলো , বহু বছরের ব্যবহৃত কমপিউটার সময়ের নিয়মে যখন নষ্ট হয়ে যায় , বাড়ির এককোণে অবহেলিত হয়ে সেসব পরে থাকে। সেটাই 'ই'-বর্জ্য। কমপিউটার না হয়ে কমপিউটার সংক্রান্ত যেকোনো যন্ত্রাংশ হতে পারে। সেই প্রথম শব্দের আগে ই বসানো দেখেছিলাম। তারপর কত কিছু দেখলাম। ই-লার্নিং , ই-বুক ইত্যাদি ইত্যাদি। এবার কোভিড পরিস্থিতি তে শুনলাম


 'ই-স্নান'। আপনি যদি গঙ্গা স্নান করতে চান , এই পরিস্থিতি তে ভিড় যেহেতু বাঞ্ছিত নয় , আপনি বুক করলে প্রসাদের সঙ্গে এক পাত্র গঙ্গা জল ও পেয়ে যেতে পারেন। ওই গঙ্গা জলে আপনি স্নান করুন , ঘরে বসে , কিংবা আলাদা কোনো জায়গায়। ওই স্নান টার ই এখন পোশাকি নাম "ই-স্নান "। আসলে কোভিড আসার আগে থেকেই মানুষ একা থাকতে শিখে গেছে। কোভিড তার সঙ্গে যোগ করেছে একাকীত্ব। বৃদ্ধাশ্রমে বয়স্ক মানুষ একা , পাড়ার সব চেয়ে বড় বাড়িটার ঝুলন্ত বারান্দায় একা বসে থাকা মানুষ কিংবা অন্ধকার রাতে কোনো এক একাকী মানুষের বাজানো সেতার এর সুর। প্রতিদিন মানুষ একা থেকে আরো একা হয়ে যাচ্ছে। তীব্র প্রতিযোগীতা , ওর বক্স খাট আছে আমার হবে না কেন , ওর ফ্রিজ টার থেকেও আমার আরো দামি ফ্রিজ চাই , এই করতে করতে আইসোলেটেড হয়ে যাচ্ছে মানুষ। আইসোলেশনে বসে আন্টিবায়োটিক খাবার থেকেও এই আইসো লেশন অনেক বেশি যন্ত্রণার। মাটির বাড়ি ভাঙা ছাদ , এক মানসিকতা , যেই ছাদ ঢালাই হয়ে গেল , মানসিকতা গুলো ও পাল্টে যেতে শুরু করলো। জীবন কে দেখার চোখ গুলো বদলে যেতে শুরু করলো। চারপাশে দেখছি তো। গল্প হারিয়ে যাচ্ছে , প্রাণ খুলে আড্ডা হারিয়ে যাচ্ছে , সিস্টেমেটিক কথা বলতে বলতে আমরাও হয়ে যাচ্ছি এক একজন "ই-মানুষ ".... আসলে এই আত্মকেন্দ্রিক ব্যবস্থায় মানুষ অনেক আগেই আইসোলেটেড হয়ে গেছে। কোভিড সেই আইসোলেশন এ নতুন এক আইসোলেশন যোগ করেছে মাত্র। আমার চোখে যেটার নাম "ই-বেঁচে থাকা "...

Post a Comment

0 Comments